ব্রহ্মপুত্র নদের উপাখ্যান

এই দেশে নদী তো অনেক আছে কিন্তু ব্রহ্মপুত্র নদ এর গুরুত্ব যেন একটু অন্য রকম। বাঙালীকে আষ্ঠেপৃষ্ঠে জড়িয়ে রেখেছে নদীমাতৃক এই বাংলাদেশের প্রায় সবকয়টি নদী।

গ্রীষ্মের কড়া রোদে যেমন নদীতে একটি ঝাঁপ সকল ক্লান্তি এবং গরম দূর করে দেয় ঠিক তেমনিই বর্ষায় বৃষ্টির টিপ টিপ ফোঁটা একে করে তোলে মনোমুগ্ধকর।

ব্রহ্মপুত্র নদ এশিয়া মহাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ নদ। সংস্কৃত ভাষায় ব্রহ্মপুত্রের অর্থ হচ্ছে “ব্রহ্মার পুত্র”। ব্রহ্মপুত্রের পূর্ব নাম ছিল লৌহিত্য। নদটি বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন নামে পরিচিত যেমন অসমীয়ায়: লুইত, ব্ৰহ্মপুত্ৰ নৈ ইত্যাদি।

ব্রহ্মপুত্রের উৎপত্তি হিমালয় পর্বতমালার কৈলাস শৃঙ্গের নিকট জিমা ইয়ংজং হিমবাহে, যা তিব্বতের পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত। জাঙপো নামে তিব্বতে পুর্বদিকে প্রবাহিত হয়ে এটি অরুণাচল প্রদেশে ভারতে প্রবেশ করে যখন এর নাম হয়ে যায় সিয়ং। তারপর আসামের উপর দিয়ে দিহাঙ নামে বয়ে যাবার সময় এতে দিবং এবং লোহিত নামে আরো দুটি বড় নদী যোগ দেয় এবং তখন সমতলে এসে চওড়া হয়ে এর নাম হয় ব্রহ্মপুত্র।

তিব্বত ও আসামের ভিতর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে কুড়িগ্রামের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। ময়মনসিংহের দেওয়ানগঞ্জের কাছে ব্রহ্মপুত্র দক্ষিণ-পূর্ব দিকে বাঁক নিয়ে ময়মনসিংহ জেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে ভৈরববাজারের দক্ষিণে মেঘনায় পড়েছে।

১৭৮৭ সালে ভূমিকম্পের কারণে ব্রহ্মপুত্র নদীর তলদেশ‌ উঠিত হবার কারণে এর দিক পরিবর্তিত হয়ে যায়। ১৭৮৭ সালের আগে এটি ময়মনসিংহের উপর দিয়ে আড়াআড়ি ভাবে বয়ে যেত‌। পরবর্তিতে এর নতুন শাখা নদীর সৃষ্টি হয়। যা যমুনা নামে পরিচিত। উৎপত্তিস্থলকে এর দৈর্ঘ্য ২৮৫০ কিলোমিটার। ব্রহ্মপুত্র নদীর সর্বাধিক প্রস্থ ১০৪২৬ মিটার (বাহাদুরাবাদ)। এটিই বাংলাদেশের নদীগুলোর মধ্যে সবচেয়ে দীর্ঘ পথ অতিক্রম করেছে। ব্রহ্মপুত্রের প্রধান শাখা হচ্ছে যমুনা। এক কালের প্রশস্ত ব্রহ্মপুত্র নদ বর্তমানে শীর্ণকায়, দূষণে ভরপুর।

সর্বশেষ খবর ওশানটাইমস.কম গুগল নিউজ চ্যানেলে।

সব সংবাদ

For add

oceantimesbd.com