কপ-২৭ সম্মেলন: ক্ষতিপূরণের খতিয়ান তুলে ধরবে বাংলাদেশ


জলবায়ু পরিবর্তন এবং এর প্রভাব মোকাবিলায় করণীয় নিয়ে মিশরের শার্ম এল-শেখে বসছে কপ-২৭ জলবায়ু সম্মেলন। জলবায়ু পরিবর্তনের হাত থেকে বিশ্বকে বাঁচানোর প্রতিশ্রুতি বারবার নেওয়া হলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। উন্নত দেশগুলো বিশ্বকে বেশি উত্তপ্ত করছে ফসিল ফুয়েল ব্যবহারের ফলে। এতে করে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলো।

জলবায়ু সহিষ্ণু অর্থনীতির কথা বলা হলেও যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ভারত, ব্রাজিল ও রাশিয়াসহ অনেক দেশ মানছে না। ফলে বন্যা, খরা, ঘূর্ণিঝড়সহ নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগ আঘাত হানছে বাংলাদেশের মতো দেশগুলোতে। কিন্তু ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য প্রতিশ্রুত অর্থ পাচ্ছে না দেশগুলো। ইংল্যান্ডের গ্লাসগোতে অনুষ্ঠিত কপ-২৬ এ বিশ্বকে বাঁচাতে নানা ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি।

রোববার (৬ নভেম্বর) থেকে শুরু হওয়া বিশ্বের সবচেয়ে বড় জলবায়ু সম্মেলনে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম বাংলাদেশ নিজেদের দাবি ও ক্ষতিপূরণের খতিয়ান তুলে ধরবে। কিন্তু তা কতটুকু বাস্তবায়ন হবে এটা নিয়ে সংশয় রয়েছে পরিবেশবাদী সংগঠনগুলোর মধ্যে।

মোটা দাগে ঢাকার পক্ষ থেকে সম্মেলনে ২০২৫ সাল পর্যন্ত উন্নত দেশগুলো প্যারিস চুক্তির আওতায় প্রতিবছর ১০০ বিলিয়ন ডলার দেওয়ার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে, তা নিশ্চিত করার দাবি জানানো হবে। পাশাপাশি বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে ২০২৫ সালের পর এ বিষয়ে উন্নত দেশগুলোর অবস্থান কী হবে, সেটি আলোচনায় রাখতে চায় ঢাকা।

এবার জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, খরা এবং বন্যাসহ নানাবিধ কারণে যেসব মানুষ বাস্তচ্যুত হচ্ছে তাদের পুনর্বাসনের দায়িত্ব আন্তর্জাতিকভাবে দেখতে হবে। এছাড়া অভিযোজন ও প্রশমন, সবুজ প্রযুক্তি হস্তান্তরে উন্নত দেশগুলোকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হবে। এর বাইরে লস অ্যান্ড ডেমেজ ইস্যু নিয়ে কথা বলবে ঢাকা। ঢাকার চাওয়া হচ্ছে, ১০০ বিলিয়ন ডলারের বাইরে লস অ্যান্ড ডেমেজের জন্য আলাদা অর্থায়নের দাবি জানানো।

রোববার শুরু হয়ে মোট ১৩ দিন চলবে এবারের কপ-২৭ সম্মেলন। এবারের আয়োজনে ১৯৮টি দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান বা তাদের প্রতিনিধিরা অংশ নেবেন। তবে গতবার গ্লাসগোতে কপ-২৬-এ অংশ নিলেও এবার মিশর যাচ্ছেন না বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

কপ-২৭ এ বাংলাদেশের এজেন্ডা হিসেবে জানা গেছে, জলবায়ু ইস্যুতে কোনো বিষয় কিন্তু সুরাহা হয়নি। ২০২৫ পর্যন্ত ১০০ বিলিয়ন ডলারের যে প্রতিশ্রুতি আছে উন্নত দেশগুলোর, সেটা এখনও পূর্ণ হচ্ছে না। সেটার জন্য একটা কনক্রিট আলোচনা করবে। কীভাবে টাকাটা আসবে সেটার আলোচনা হতে পারে। গতবারও এটা তোলা হয়েছে, সে কথাগুলো আবারও আসবে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, জলবায়ু সম্মেলন একটি চলমান প্রক্রিয়া। বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনে যে সমস্যা তৈরি করেছে এ সম্মেলন সেসব সমস্যা সমাধানের পথকে জিইয়ে রাখার একটা বড় মাধ্যম। শীর্ষ নেতারা এ সম্মেলনে নতুন কী কী সিদ্ধান্ত নেন সেটার ওপর নজর থাকবে জলবায়ুর প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত উন্নয়নশীল দেশগুলোর। তাছাড়া উন্নত দেশগুলো জলবায়ু ইস্যুতে পুরোনো সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে কতটুকু কার্যকর ভূমিকা রাখার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে তাতে নজর থাকবে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর।

সর্বশেষ খবর ওশানটাইমস.কম গুগল নিউজ চ্যানেলে।

Tags: , , ,

সব সংবাদ

For add

oceantimesbd.com