কেফায়েত উল্লাহ চৌধুরী : ২৯ মার্চ ২০২৩, বুধবার, ০:০৯:২৮
ঢাকায় শুরু হয়েছে ইউনেস্কোর ইন্টারগভর্নমেন্টাল ওশনোগ্রাফিক কমিশনের (IOC) ভারত মহাসাগর বিষয়ক আন্তসরকারী আঞ্চলিক কমিটির (IOCINDIO) নবম অধিবেশন। তিন দিনব্যাপী এই অধিবেশনে অংশ নিয়েছেন ভারত মহাসাগর উপকূলের ১৯টি দেশের সমুদ্র সংক্রান্ত সরকারি দফতরের প্রতিনিধি ও সমুদ্র বিজ্ঞানীরা।
তিনদিনের এই সম্মেলনে সদস্যভুক্ত দেশগুলোর করা এই অঞ্চলের সমুদ্র বিষয়ক নানান গবেষণা তথ্য বিনিময়, অভিজ্ঞতা আদান প্রদান, নেটওয়ার্কিং, তরুণদের সম্পৃক্ত করণ এবং গবেষণা জোরদার করার নানান প্রতিবন্ধকতা দূর করার বিষয়ে আলোচনা হবে। এই অধিবেশন থেকে ভারত মহাসাগর বিষয়ক আন্তসরকারী আঞ্চলিক কমিটিকে সরাসরি ইউনিস্কোর একটি সাব কমিটিতে রূপ দেওয়ার প্রস্তাবনার বিষয়েও আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে। এছাড়া আইওসিআইএনডিআইও-এর পরবর্তী ২ বছরের জন্য নেতৃত্ব নির্বাচনও হবে এই অধিবেশন সমাপ্তির আগে।
এই কমিটির বর্তমান সভাপতিত্ব করছে বাংলাদেশ। সেই ধারাবাহিকতায় অধিবেশনের আয়োজকও হয়েছে বাংলাদেশ। এ কারণেই ঢাকার হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালেই অনুষ্ঠিত হচ্ছে সমুদ্র বিষয়ক আঞ্চলিক এই শীর্ষ সম্মেলন। যার সভাপতিত্ব করছেন বাংলাদেশের প্রতিনিধি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স ইউনিটের প্রধান রিয়ার অ্যাডমিরাল খুরশিদ আলম।
এবারের অধিবেশন থেকে বাংলাদেশসেহ এই অঞ্চলের প্রত্যাশা প্রাপ্তির বিষয়ে জানতে আইওসিইনডিআইও-এর বর্তমান সভাপতি রিয়ার অ্যাডমিরাল খুরশিদ আলমের সঙ্গে কথা বলেছে ওশান টাইমস। বিশেষ এই স্বাক্ষাৎকারে তিনি জানান, আইওসিইনডিআইও একটি আঞ্চলিক কমিটি থেকে ইউনিস্কোর সাব কমিশনে রূপ দিতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন তিনি।
খুরশিদ আলম বলেন, সাগরে যে বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে সেটি নিয়ে আমরা গবেষণা করতে পারি না। কারণ আমরা গবেষণা বরাদ্দ দিতে পারি না। আমাদের এই সংগঠনটি প্যারিস বেইজড ইউনিস্কোর অধীন একটি কমিটি। আমরা চেষ্টা করছি এটিকে ইউনেস্কোর ইন্টারগভর্নমেন্টাল ওশনোগ্রাফিক কমিশনের একটি আঞ্চলিক কমিটি থেকে সাব কমিশনে উন্নীত করবো।
১৯৮২ সাল থেকে এটি কমিটি হিসেবে কাজ করলেও তিনি সভাপতি হিসেবে গত বছর থেকে দায়িত্ব পালন করছেন বলেও জানান।
সাব কমিশন হলে দেশের লাভ কি জানতে চাইলে খুরশিদ আলম জানান, বর্তমানে ইউনিস্কো থেকে বাংলাদেশ কোনো বাজেট পায় না। বাজেট ছাড়া সাগরে কাজও করা যায় না। যদি আইওসিইনডিআইও-কে সাব কমিশনে রূপান্তর করা যায় তাহলে কিছু বাজেট আসবে। সেটা দিয়ে সাগরে কাজ করা যাবে।
তিনি বলেন, আমাদের দেশ সাগরে বাজেট না দিলেও ভারত, ইরান, কুয়েত কাজ করে কারণ তাদের বাজেট আছে। কিন্তু আমরা এখনো সাগরমুখী না হওয়ায় আমরা কিছুই করতে পারছি না। এখন সাগর নিয়ে কাজ করতে হলে আমাদেরকে উপকূলের ঝুঁকিগুলো আগে চিহ্নিত করতে হবে। কারণ সারাদেশের উপকূলই ভাঙছে, এটা কেন ভাঙছে সমাধান কি এটা বের করা দরকার। তারপর নানান দুর্যোগতো আছেই। সাইক্লোন হলে কত আগে আমরা জানতে পারবো এবং পরের ক্ষতি কি সেটাও জানতে হবে। তাহলে সমুদ্রে কাজ করা অনেক সহজ হবে।
বিগত সেশনে আইওসিইনডিআইও-এর সভাপতি থাকাকালে কি কি ভূমিকা রেখেছেন জানতে চাইলে খুলশিদ আলম বলেন, আমি মূল জায়গায় হাত দিয়েছি। সাব কমিশন আমি করেই ছাড়বো ইনশাআল্লাহ। ইতোমধ্যে ৫টি মিটিং করে ফেলেছি। জুলাইতে প্যারিসে এর মূল বৈঠক বসবে। এই বৈঠকে যদি আমরা সাব কমিশনে উন্নীত করতে পারি তাহলে আমরা ইউনিস্কের বাজেট পাবো। এর আগে কোনো বাজেট পাওয়া সম্ভব না।
তিনি আরও বলেন, যদি সাব কমিশন করে বাজেট আনতে পারি এবং এই অধিবেশনে নির্বাচনও আছে আমি যদি সভাপতি থাকি তাহলে বাজেট বাংলাদেশের দিকে আনতে পারবো।
ব্যাপক গবেষণা ও ব্যবসায়ীদের উৎসাহিত করা ছাড়া ব্লু ইকোনমি অর্জন সম্ভব নয় জানিয়ে, গবেষণা জোরদার করার বিষয়ে সকল পদক্ষেপ নেওয়ারও আশ্বাস দেন বাংলাদেশ সরকারের সমুদ্র বিষয়ক দফতরের শীর্ষ এই কর্মকর্তা।
সর্বশেষ খবর ওশানটাইমস.কম গুগল নিউজ চ্যানেলে।
Tags: blue economy, IOCINDIO, UNESCO, মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স ইউনিট, রিয়ার অ্যাডমিরাল খুরশিদ আলম, সমুদ্র অর্থনীতি
For add